আমরা এখন বাস করি সৃজনশীলতার যুগে। অনেকেই কোন ঘটনা দেখলে বা শুনলে সেটার সম্পর্কে মনের অজান্তেই তার সমালোচনা করে ফেলি। বিষয়টার সম্পর্কে অনেক তথ্য মনের মাঝে উঁকি দেয়। স্বাভাবিকতার বাইরে এসে নিজের মনের মত বিষয়টা উপস্থাপনা করাটাই হল সৃজনশীলতা। আমরা এটাকেই বলি Article Writing যা আমাদের দ্বারা একেবারে অসম্ভব কিছু না।
অনলাইনে ক্যারিয়ার গঠন করার অন্যতম সম্ভাবনাময় এবং প্রসারময় পথ গুলোর একটি হল লেখালেখি যা Article Writing বা কন্টেন্ট রাইটিং হিসাবে পরিচিত। যেখানে আপনি কোন বিষয়ের উপর লিখে কাজ করতে পারেন। ওয়েবে কোন বিষয় কে সামনে রেখে শুরু হয় আর্টিকেল লেখা।
১। Article Writing টা কি আমার জন্য ?
আপনার মধ্যে যদি কোন বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে এবং আপনার ইংরেজি যদি মোটামুটি ভালো মানের হয় তবে আপনি সহজেই আর্টিকেল লিখতে পারবেন। এছাড়াও যাদের লেখালেখি করতে ভালো লাগে তারা অনলাইনে এটাকে পেশা হিসাবে নিতে পারেন।
২। আর্টিকেল কত প্রকারের হয়?
সাধারনত আর্টিকেল লেখা হয় ব্লগে। এছাড়াও বিভিন্নি জায়গাতে আর্টিকেল লেখা হয় অর্থাৎ ব্লগ আর্টিকেল ছাড়াও আর্টিকেল বিভিন্ন ধরনের হয় ।
যেমন-
# প্রোডাক্টের রিভিউ
# কোন পণ্যর সেলস পেজ
# ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য রিসোর্স বই,
# ব্রশিউর,
# লিফলেট বা অন্যান্য প্রচারণার কাজে
৩। কিভাবে শুরু করবো Article Writing ?
প্রথমে চিন্তা করুন আপনি এই পেশায় আসতে চান কিনা? ধরে নিলাম আপনি আসতে চান। প্রথমে যে কাজ গুলো করবেন-
নিজে নিজেই বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত লিখে যান। এতে আপনার লেখালেখির দক্ষতা ও আত্নবিশ্বাস বাড়বে। শুরুতেই কি নিয়ে লিখবেন ভবছেন?
- যা আপনি সবচেয়ে ভালো জানেন এমন একটা বিষয় বাছাই করুন
- আপনার মনে স্ট্রং ফিলিং কাজ করে সেই বিষয়কে গুরুত্ব দিন
- কোন কোন বিষয়ে মানুষ পড়তে বেশি আগ্রহী সেসব নিয়েও লিখতে পারেন
মনে রাখবেন প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিষয় বস্তু ও এপ্রোচ অনুযায়ী লেখার মান, কোয়ালিটি এবং স্ট্যাইল ভিন্ন ভিন্ন হয়। এছাড়াও ব্লগ আর্টিকেল, প্রডাক্ট রিভিউ, সেলস পেজ, রিসার্স পেজ, স্টোরি শেয়ারিং, ক্যাস স্টাডি’র জন্য লেখা কেমন হয় বা হতে হবে সেই বিষয়ে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে। গুগলে সার্চ করে লেখা গুলো ফলো করুন।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্লগে (জেনেসিস ব্লগ, টেকটিউনস ইত্যাদি ) এর সম্পর্কে আরও অনেক লেখা পাবেন যা আপনার কাজে দেবে। ঢাকায় যারা থাকেন তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ( creative IT Ltd একটি বিশ্ব মানের প্রতিষ্ঠান) থেকে এর উপর শর্ট কোর্স করে নিতে পারেন।
৪। কিভাবে এটা থেকে আয় করা যায় ?
বিভিন্ন বপগ এ লেখে আপনি আপনার পরিচিতি বাড়াতে পারেন।গেস্ট ব্লগিং করে একটা পর্যায় আয় করতে পারেন তাছাড়া ওডেস্ক ও ইল্যান্সের মত নাম করা ফ্রিল্যান্স মার্কেট প্লেস গুলোতে রয়েছে হাজার হাজার প্রজেক্ট। শুধু মাত্র ইল্যান্সে গত ৩০ দিনে লেখক চেয়ে জব পোস্ট হয়েছে ৯০,২৭৭ টি। এমনকি রাইটিংকে নিয়ে গড়ে উঠছে মার্কেটপ্লেসের সংখ্যাও নিছক কম নয়। যেমনঃ
- WriterAccess
- TextBroaker
- iWriter
আয় করার সুযোগ আছে নিজের ব্লগিং সাইটে ইনফরমেটিভ ব্লগ এবং অ্যাফিলিয়েট সাইটে প্রডাক্ট রিভিউ লিখে।বাংলাদেশে এমন অনেক ফ্রিল্যান্স লেখক আছেন যারা ঘন্টায় ১০-১২ থেকে ৩০ ডলার আয় করে থাকেন।
৫।Article Writing এর চাহিদা কেমন বা এর ভবিষ্যত কি ?
দিনদিন আর্টিকেল রাইটিং এর চাহিদা বাড়ছে। ওডেস্ক ও ইল্যান্সের মত জায়গাতে এর কাজের পরিমান বাড়ছে। সবাই এখন নিজের পনের প্রসার বাড়াতে এর দিকে ঝুকছে।দেশি-বিদেশি ইন্টারনেট মার্কেটিং অথবা কনটেন্ট মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানেও এর চাহিদা বাড়ছে।
৬। Article Writing এর ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো মনে রাখবেন ।
# আপনার লেখালেখিতে নিজের বাচন ও প্রকাশ ভঙ্গি তৈরি করুন, যা আপনাকে অন্যদের চেয়ে ভিন্ন এবং সহজেই বিশেষ করে তুলবে।
# লেখার সময় গ্রামারের প্রতি এবং শব্দ ও বাক্য চয়নে বিশেষ নজর দিন।
# ভালো মানের লেখকদের বই এবং জনপ্রিয় ব্লগারদের বই নিয়মিত পড়ুন।তাদের লেখনী ফলো করতে করতে এক সময় আপনার নিজস্ব স্টাইল তৈরি হবে। যা আপনাকে সবার মাঝে ইউনিক করে তুলবে।
# লেখালেখিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ড্রাফটিং এবং রিভিশন। আপনাকে অবশ্যই লেখার শেষে লেখাটির প্রুফরিড করতে হবে।
চলুন বাস্তবে দেখি কেমন করে লিখতে হবে?
আপনাকে প্রথমে ঠিক করতে হবে আপনি কি লিখবেন, কেন লিখবেন, কাদের জন্য লিখবেন । তারা কি চায় ।লেখার পাঠক কে সেটা নির্ণয় করুন। মনে রাখতে হবে লেখা যেন যুক্তিযুক্ত হয়। ওয়েবসাইট এবং বিষয় বস্তু অনুযায়ী ঠিক করে নিতে হয় লাইন অফ অ্যাকশন। আর প্রথমেই নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন আপনি এই বিষয়ের পাঠক হলে কি কি তথ্য পেতে চাইতেন এই লিখা থেকে। ধরুন পাঠক জানতে চায় ক্রিয়েটিভ আইটি কি?
নিচের তথ্য গুলো দেখুন।
- ক্রিয়েটিভ আইটি কি?
- এরা কি সেবা দেয় ?
- কাদের জন্য এটা দরকার ?
- এর অবস্থান কোথায় ?
- বাস্তবে এর মূল্য কত খানি ?
- কেমন টাকা দিতে হবে?
কারণ পাঠকের এই প্রশ্ন গুলো ই অজানা, ঐ বিষয় থেকে তথ্য গুলো সে জানতে চাচ্ছে।
সব শেষে আপনাকে মনে রাখতে হবে এমন লেখা লিখবেন যা আপনাকে সবার চেয়ে আলাদা করে দিবে।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে।আজ এইতুকু,আগামি পর্বে আপনাদের আর্টিকেল রাইটিং এর কাজের পদ্ধতি গুলো দেখাব।
আমাকে ফেসবুকে পেতে পারেন………https://www.facebook.com/otcfeni/
No comments:
Write comments