অনেকে লেখালেখি করতে চান কিংবা চেষ্টা করেন। কিন্তু ভাল দক্ষতা না থাকার কারনে পাঠক খুজে পাননা।সেজন্য হতাশ হয়ে যান। তাছাড়া গুগলের পেঙ্গুইন আপডেটের পর এসইও করার জন্য কনটেন্ট রাইটিং খুব বেশি গুরুত্বপূর্ন। ওয়েবসাইটের কনটেন্ট, গেস্ট ব্লগিং কিংবা ব্লগিং এ টাইপ কাজগুলো খুব বেশি কাজ দেয়। আবার কোন প্রডাক্টের ব্রান্ডিং কিংবা মার্কেটিংয়ের জন্য গেস্ট ব্লগিং সবচাইতে বেশি কাজ করে। আমি এসইও কোর্স করানোর সময় আর্টিকেল রাইটিংয়ের উপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সেজন্য আর্টিকেল রাইটিংয়ের ব্যপারে কিছু টিপস নিয়ে আমার আজকের এ লেখা। পুরোটুকু পড়ে নিজেরাও লেখার চেষ্টা করুন, হয়ে উঠুন কনটেন্ট রাইটার।
ধাপঃ১
যদি আপনি অন্য কারও জন্য লিখেন, তাহলে প্রথমে ক্লায়েন্টের কাছ থেকে প্রথমে কিছু তথ্য জেনে নিন। ক্লায়েন্টের চাহিদা, উদ্দেশ্য এবং কোন বিশেষ নির্দেশাবলী থাকলে সেটা লেখার শুরুতে ভালভাবে জেনে নেন।
ধাপঃ২
যদি আর্টিকেলটি নিজের জন্য হয় অর্থাৎ নিজের কোন পণ্যের ব্রান্ডিংয়ের জন্য হয়, তাহলে কি করবেন? প্রথমে ভেবে নিন কেন লিখছেন? এ লেখাতে কি কোন পণ্যের সরাসরি প্রচার করবেন নাকি পণ্যটির ব্যাপারে তথ্যবহুল কিছু লিখবেন নাকি পুরোপুরি শিক্ষনীয় কিছু লিখবেন, সেটি আগে নির্ধারণ করে নিন। অনেকভাবেই আপনি আপনার লেখাতে আপনার পণ্যকে উপস্থাপন করতে পারেন।
সেগুলো নিয়ে অন্য কখনও বিস্তারিত লেখব। এখানে শুধু শিরোনামগুলো বলি।
১। Evolution Approach, ২। Perspective Approach ৩। Interview Approach ৪। Review Approach ৫। Features Approach ৬। Benefits
Approach ৭। Negatively Affected Approach ৮। Tech Angle Approach ৯। Newbie Angle approach ১০। Expert Approach ১১। Pitfalls Approach
উপরের যেকোন একটি পন্থা ঠিক করু, সেটা নিয়ে অনেক গবেষনা করুন, এরপর লেখা শুরু করুন।
ধাপঃ৩
কাদের জন্য লেখাটি লিখছেন সেটা আগে ঠিক করুন। লেখার পাঠক কে সেটা নির্ণয় করুন।যাদেরকে টার্গেট করে লিখছেন তারা কি আগের থেকেই এ ব্যপারে কোন ধারনা আছে নাকি একদম নতুন। আপনার পাঠক টার্গেট ঠিক করে তাদের বোঝার উপযোগী করে লেখা শুরু করুন, যাতে আপনার পাঠক লেখাটি পড়ে কিছু বুঝতে পারে।
ধাপঃ৪
আর্টিকেল লেখার সবসময় চেষ্টা করুন সবার থেকে ভিন্ন কিছু এবং অনেক তথ্যসমৃদ্ধ কিছু উপস্থাপন করার। সেজন্য সেই টপিকসের উপর অনলাইনে থাকা অন্য লেখাগুলো আগে পড়ুন। সেজন্য গুগল, ইয়াহু, ওইকিপিডিয়া সার্চ করুন, তারপর প্রাপ্ত লেখাগুলো প্রথমে পড়ে নিন। এতে যে ব্যপারটি নিয়ে লিখছেন সেটির ব্যপারে আপনারও অনেক জ্ঞান বাড়বে। কখনও কোন লেখা কোথাও থেকে কপি করেবেননা, এতে কপিরাইটে যেমন সমস্যা হবে, তেমনি গুগল আপনাকে ব্ল্যাক লিস্টেড করে ফেলবে। অন্যের লেখাকে নিজের মত করে পরিবর্তন করে লিখতে পারেন। তারপরও যদি অন্য কোথাও থেকে কোন লেখা নিতে হয়, তাহলে এভাবে লেখা যাবে, ”এ ব্যপারে ইকরাম তার লেখাতে বলেছেন” এভাবে শুরু করতে পারেন।
ধাপঃ৫
প্রফেশনার রাইটাররা লেখার আগে যা লিখতে চান, সেটার মূল পয়েন্টগুলো লিখে নেন। ভাল কোন লেখার খুবই কাযকরী একটি টিপস এটি। তারপর লেখার সময় শুধু এই পয়েন্টগুলোর বিস্তারিত লিখলেই একটি ভালমানের লেখা তৈরি হয়ে যায়। ওয়েবমার্কেটিং, সার্চ র্যাংকিং এবং কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের জন্য মৌলিক এবং ভাল মানের লেখা লিখার চেষ্টা করতে হবে।
ধাপঃ ৬
আপনার পুরো লেখাটির তিনটি ধাপে ভাগ করে লিখেন। সূচনা, বডি, উপসংহার। সূচনা পর্বে আপনাকে লেখতে হবে, এ লেখার পাঠক পুরো আর্টিকেলটিতে কি পেতে যাচ্ছে? এখানের লেখাটি পড়েই পাঠক বাকিটুকু পড়বে কিনা সেটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। সুতরাং এ অংশটুকু অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। টেকটিউনসের অনেকে লেখা পাই, যারা এ অংশে লেখে ”আমি সম্পূর্ণ নতুন। ভুল হলে ক্ষমা করবেন” এগুলো আপনার পাঠককে লেখাটি পড়ার ব্যাপারে আগ্রহ নষ্ট করে দেয়। অনেকেই চায়না নতুন কারো লেখা পড়ে সময় নষ্ট করতে। এ ধরনের ভদ্রতা খুব বড় ধরনের বোকামী।
তারপর আছে লেখার মুল অংশ অর্থাৎ বডি অংশ। সেখানেই পুরো লেখাটির আকর্ষনীয়ভাবে সবার জন্য সহজভাবে লেখতে হবে। লেখাতে কাউকে আঘাত করে কিছু লিখবেননা, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু না লেখা ভাল, না হলে আপনার নিয়মিত কিছু পাঠক হারাবেন। কে, কোথায়, কেন, কখন, কি, কিভাবে- আপনার টপিকসের সম্পর্কিত এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েও একটি ভালমানের আর্টিকেল লেখা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। একই শব্দ বারবার ব্যবহার করলে লেখাটির মান খারাপ হয়ে যায়। সেরকম ক্ষেত্রে অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করতে পারেন।
যেকোন লেখাতে ঢুকার পর প্রথমে চোখের প্রশান্তি জরুরী। চোখ যদি দেখেই বোরিং হয়ে যায় তাহলে ব্রেন না পড়ার সিদ্ধান্ত নিবে। আর চোখ সবসময় সুন্দর জিনিস খুজে। সেজন্য লেখার সময় কয়েকটি বিষয় আমি মনে রাখি সবসময়। ক) পয়েন্ট পয়েন্ট করে সব লিখি। খ) লেখার মধ্যে আকর্ষণীয় ছবি ব্যবহার করি।
সবশেষে থাকবে উপসংহার। সেখানে পুরো লেখাটির কোন সামারি কিংবা কি শিখা গেল লেখাটি পড়ে, সেটি উল্লেখ করুন। এ অংশে পাঠকদের কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে। অনেকে এ অংশে পাঠকদের জন্য প্রশ্ন রেখে যান, এটা খুব ভাল পদ্ধতি মনে হয়েছে আমার কাছে।
ধাপঃ ৭
এ মুহূর্তে চলে এসেছেন শেষ ধাপে। আগের ধাপে আপনার লেখা পুরো শেষ। এবার লেখাটি প্রকাশ করার আগে একজন পাঠক হিসেবে কমপক্ষে ৩বার পড়ুন। লেখাতে বানান ভুল, গ্রামার ভুল থাকলে সেটি ঠিক করুন। কোন অংশের লেখার উপস্থাপনে পরিবর্তন আনতে হলে সেটি ঠিক করুন।
এ ধাপগুলো অনুসরণ করে লেখালেখি শুরু করুন। কমপক্ষে ৫টি আর্টিকেল লেখুন। দেখবেন একদিন নিজেও প্রফেশনাল রাইটার হয়ে যেতে পারবেন। আর একজন প্রফেশনাল রাইটার হিসেবে প্রেস রিলিজ, ব্লগ রাইটিং, সেলসকপি রাইটিং এবং অন্য যেকোন জায়গাতে লেখালেখি করে ভাল মানের আয় করতে পারবেন। সেই সাথে বোনাস হিসেবে পাবেন প্রচুর সুনাম।
সবশেষে বলব, গুগল উপযোগী এবং ভালমানের লেখা ৭টি বিষয়ের উপর নির্ভর করে
১. লেখকের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা
২. লেখকের এসইও জ্ঞান এবং দক্ষতা
৩. গ্রামারের সঠিক ব্যবহার
৪. সঠিক ও সুন্দর শব্দের ব্যবহার
৫. লেখার টপিকস সম্পর্কে গবেষণা ও প্রচুর জ্ঞান
৬. মৌলিক লেখা্
৭. পাঠকদের মনোযোগ ধরে রাখতে পারা।
এ লেখাটি শুধুমাত্র নিজে একা না পড়ে, সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিন। সেজন্য এ পোস্টটির লিংক আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন। ভাল লাগলে কমেন্ট করলে পরবর্তী আকর্ষণটি পোস্ট করতে উৎসাহ পাব।
No comments:
Write comments