আর্টিকেল রাইটিং বেসিক্স
আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, প্রোডাক্ট রিভিউ, ম্যাগাজিন, নিউজপেপার ইত্যাদিতে ব্যাপক আকারে আর্টিকেলএর বিচরণ দেখতে পাই যার মাধ্যমে কোন সদূরপ্রসারী ব্যবসার লক্ষ্যে পণ্য অথবা সেবাকে বিশদভাবে তুলে ধরা হয়।
আমাদের আলোচনায় মোটামুটি অনলাইন মার্কেটিংকে মুখ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। জিরো থেকে কিভাবে একজন সফল আর্টিকেল রাইটার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই মূলত আট পর্বে সাজানো হয়েছে এই পুরো সিরিজটি।
কি কি থাকছে আমাদের এই আট পর্বের সিরিজে?
- আর্টিকেল রাইটিং বেসিক্স
- অনলাইন আর্টিকেল রাইটিং ক্যারিয়ার
- প্ল্যানিং অফ আর্টিকেল রাইটিং
- রাইটিং প্রসেসঃ প্রি- রাইটিং
- প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটিং
- SEO-ফ্রেন্ডলী আর্টিকেল রাইটিং
- কমন মিসটেকস ইন আর্টিকেল রাইটিং
- ১০১ টিপস ফর আর্টিকেল রাইটার্স
আট পর্বের শুরুতে প্রথমেই আমি প্রাথমিক টপিক ‘আর্টিকেল রাইটিং বেসিক্স’ নিয়ে আলোচনা করব। এই পুরো সিরিজটি উপরে উল্লিখিত আটটি পর্বের সমনয়ে তৈরি করা হয়েছে। এবং যদি কিনা আপনি ধারাবাহিকভাবে এই পুরো সিরিজটি শেষ করতে পারেন তাহলে আপনি আর্টিকেল রাইটিং এর নাড়িনক্ষত্র সব জানতে পারবেন যার ফলশ্রুতিতে অনলাইন মার্কেটিং এর জন্য চোখ-ঝাঝানো আর্টিকেল লিখতে পারবেন।
এই সিরিজটি মুলতঃ তাদের জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে যারা কিনা আর্টিকেল লিখে স্মার্ট আয় করতে চান অথবা যেকোনো বিষয়ে কেউ কিছু সঠিকভাবে লিখতে চান। এটি অবশ্যই আপনাকে একজন সফল এবং ক্রিয়েটিভ রাইটার হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে দিবে।
আর্টিকেল রাইটিং, যেটা কিনা একটা ভালো উপার্জনের উৎস, বর্তমান অনলাইন মার্কেটিং এর গোল্ডমাইন হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।একটি কার্যকরী আর্টিকেল লিখতে পারার ক্ষমতা জন্মগতভাবে আসে না, কিন্ত শুধুমাত্র সঠিক উপায়ে বেশি বেশি রিসার্চ আর প্র্যাকটিস করার মাধ্যমে একজন ক্রিয়েটিভ রাইটার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারাটা অসম্ভব কিছু নয়।
এই রাইটিং লেসন সিরিজটিতে, আমরা কিভাবে নিজেদেরকে এই পেশায় এনগেজ করতে পারবো এবং কি টেকনিকস অবলম্বন করলে আমরা নিজেদের অবসথানকে আরও সুদৃঢ় করতে পারবো সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো। আমি কঠিনভাবে বিলিভ করি, এই পুরো সিরিজটি শেষ করতে পারলে আপনি অনায়েশেই নিজের ভেতর অনেক কনফিডেন্স সঞ্চার করতে পারবেন।
৫ টি মূলমন্ত্র ক্রিয়েটিভ রাইটিং এর ক্ষেত্রে
একটি আর্টিকেল খুবই কার্যকরী এবং ক্রিয়েটিভ হতে পারে যদি কিনা ওই রাইটার এর নিন্ম্লিখিত ৫ টি মূলমন্ত্র সম্পরকে সম্যক ধারনা থাকেঃ
- প্ল্যানিং
- বিষয় নির্বচন
- আর্টিকেল রাইটিং
- আর্টিকেল উপস্থাপন
- আর্টিকেল প্রমোশন
প্ল্যানিং
প্ল্যানিংকে আমরা তুলনা করতে পারি, শস্য ফলনের ক্ষেত্রে আমরা যে প্রস্তুতি নিয়ে থাকি তার উপর। যেমনঃ আপনাকে প্রথমেই সিদধান্ত নিতে হয় কি ধরনের শস্য আপনি ফলাতে চান, কোথা হতে বীজ সংগ্রহ করবেন, কিভাবে শস্যের যত্ন নিবেন, শস্য উৎপাদনের পর তা কার কাছে বা কোথায় বিক্রি করবেন এইরকম আরও নানান বিষয়।
যেকোনো টপিকের উপর একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং শুরুর প্রাক্কালে আমরা নিন্মের পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর প্রদানের মাধ্যমে আমাদের আইডিয়াকে সুসজ্জিত করতে পারি। এগুলো হলঃ কি, কে, কিভাবে, কেন এবং কোথায়?
১। কি উদ্দেশ্যে আর্টিকেল লেখা হবে? এটা কি নিচেত কোন পণ্য সম্পর্কে উপদেশ, নির্দেশনা, তথ্য প্রধান, তুলনা অথবা বর্ণনা করে নাকি আপনি উক্ত পণ্যের কোন প্রমোশন করছেন?
২। কে বা কারা টার্গেট রিডার, অর্থাৎ কাদের জন্য লেখাটি তৈরি করা হয়েছে?
৩। কিভাবেটার্গেট গ্রুপের জন্য আর্টিকেল ডিজাইন করতে হবে?
৪। কেন টি অত্যাবশক এবং কেন রিডাররা এটা পড়বে?
৫। কোথায় আর্টিকেলটি প্রকাশিত হবে?
বিষয় নির্বচনঃ
বিষয় বা টাইটেল নির্বচন হল আর্টিকেল রাইটিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেমনঃ কী ধরণের ফসল আমরা উৎপাদন করতে চাই। আমরা যদি আমাদের ফসল নির্বচন করতে না পারি তাহলে আমরা কি মাঠে যেয়ে শুধু রোঁদ পোহাবো? আর অবশ্যই খুব কর্যকরী ফসল নির্বচন করতে হবে যাতে করে কষ্ট ফলপ্রসূ হয়।
তেমনি আর্টিকেল রাইটিং এর ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয় হল ফলপ্রসূ বিষয় বা টাইটেল, যা প্রথম অবস্থাতেই একজন পাঠকের মন জয় করতে পারে। এমতাবস্থায়, একটি ফলপ্রসূ এবং কার্যকরী বিষয় নির্বচন করা অতীব জরুরী।
আর্টিকেল রাইটিং
বীজ বুপন, চারা লাগনো থেকে শুরু করে ফলন অবদি পুরো কাজটিকে আমরা আর্টিকেল রাইটিং এর সাথে তুলনা করতে পারি। এর মানে এই নয় যে, আপনার পুরো কাজ শেষ। এই ফসল এর জন্য আপনাকে পুরো মৌসুম জুড়ে সঠিক যত্ন নিতে হবে। তার মানে কার্যকরী দিক নির্দেশনার মাধ্যমে সফলতা নিয়ে আসতে হবে।
একটি সফল রাইটিং এর জন্য প্রয়োজন পূর্ব নির্ধারিত কাজগুলুকে সঠিকভাবে উপসথাপনের মাধ্যমে একে একটি ফ্রেমের মধ্যে নিয়ে আসা।সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হল, আমাদের মনোনিবেশ করতে হবে আর্টিকেল রাইটিং এর কথায়-ভুমিকা, বডি এবং উপসংহারের উপর।
আর্টিকেল উপস্থাপনঃ
সবকিছু গোছগাছ করে ফসল ফলানোর পর অবশ্যই আপনাকে এর উপসথাপনার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। উপসথাপনা যত দৃষ্টিনন্দন হবে আপনার ফসলের ব্যবসাও তত ভালো হবে। এ পর্যায়ে ফসলে সার প্রয়োগ, ক্ষতিকারক পোকামাকড়, আগাছা পরিষ্কার, ইত্যাদি কার্যক্রম চালনার মাধ্যমে সোনালী ফলনের চাঙ্গা ব্যবসা করার প্রয়াস চালাতে হবে।
একইভাবে, কমন ভুলগুলু পরিহার এবং প্রয়োজনীয় টিপস অনুসরণ করার মাধ্যমে আমরা একটি দৃষ্টিনন্দন এবং ফলপ্রসু আর্টিকেল দাড় করাতে পারি।
আর্টিকেল প্রমোশনঃ
প্রমোশন বলতে আমরা মুলত বুঝতে পারি, কোনকিছুকে অধিকতর আকর্ষণীয়ভাবে ভোক্তার উপস্থাপন করে তাকে ওই পণ্যের প্রতি আকৃশঠ করে তোলা।
আর্টিকেল প্রমোশন হল আপনার লেখাটিকে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগসাইট, ফেসবুক ইত্যাদিতে প্রচারণা করা। পাঠকদের জানান দেয়া যে, আপনার একটি কার্যকরী লেখা খুব শীঘ্রই পাবলিশ হতে যাচ্ছে। এমনকি পাবলিশ হওয়ার পরেও বিভিন্ন সাইটে যেয়ে আপনি আপনার প্রচারিত আর্টিকেলটির লিংক দিয়ে প্রচুর পরিমাণে পাঠক বৃদ্ধি করতে পারেন।
আমরা পরবর্তী পর্বগুলোতে এই পাচটি মূলমন্ত্র নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করবো।
প্রদেয় কোন বিষয়ের উপর কোনকিছু লিখতে পারাটা হয়ত কঠিন কিছু হবে না। আপনাকে যদি বলা হয় গরুর রচনা লিখতে-আপনি কিন্তু কিছু একটা লিখে ফেলতে পারবেন। কিন্তু যদি বলা হয় সাগরের কোন একটি মাছ নিয়ে ৫০০শব্দের একটি আর্টিকেল লিখতে হবে তাহলে তো মাথায় হাত। কিছুই না, ভালভাবে একটু রিচারস করুন। ৫০০ শব্দ কেন ৫০০০ শব্দের আর্টিকেল লিখতেও আনার হাত কাপবে না। এবং এটা আকাশের সূর্যের মত সত্য। এটা অবশ্য লক্ষ্যনীয় যে, আপনার লেখাটি তথ্যবহুল এবং হৃদয়গ্রাহী হতে হবে। সঠিক পদ্ধতিতে এবং ফলপ্রসূ টেকনিক অনুসরণ করে আর্টিকেললিখলে টা সহজেই পাঠককে আকর্ষণ করে, যার ফলে রাইটার হিসেবে আপনি স্বারথক হতে পারেন।
আর্টিকেল লেখার সময় আমাদের অবশ্যই টাকার দিকে মনযোগী না হয়ে এর মানের দিকে খেয়াল করা উচিত। আপনার লেখার মান যদি ভাল হয়, অনলাইন মার্কেটে আপনার পরিচিতি বারার সাথে সাথে ডিমান্ড অনেক বেড়ে যাবে। তখন আর আপনাকে টাকার পিছন ছুটতে হবে না, টাকা আপনার দরজায় এসে কড়া নাড়বে। সুতরাং মানসম্পন্ন লেখা অবশ্যই একটি অতীব জরুরি বিষয় এবং এই মানদণ্ডকে চিনতে চাইলে অবশ্যই আট পর্বের প্রতিটি লাইন মনোযোগ দিয়ে পরে যেতে হবে। আমি হলফ করে বলতে পারি, পুরো সিরিজটি সম্পন্ন করার পর আপন নিজের ভেতর ১০০% কনফিডেন্স পাবেন যেকোনো কিছু লিখতে পারার।
তার মানে কি আপনি একজন সফল আর্টিকেল রাইটার বনে যাবেন? হ্যা, সত্যিই তাই। বিশ্বাস না হলে, আমার সাথে এই আট পর্ব পর্যন্ত থাকুন। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে ইনশাহ আল্লাহ।
যাক, অনেক বকবক করলাম। এটি ছিল প্রথম পর্ব তাই কাজের বাইরে মনে হয় বেশি কথা বলে ফেললাম। আসলে, আমার এই লেখাটি অনেক রিচারস এর ফসল। তাই এত কনফিডেন্সের সাথে বলতে পারছি। চলুন দেখি পরবর্তী পর্বে আমরা কি নিয়ে আলোচনা করছি।
পরবর্তী পর্বে আমরা মুলত, একজন আর্টিকেল রাইটারের ক্যারিয়ার নিয়ে আলোচনা করব। কোথায় কাজ পাবেন, কত টাকা উপার্জন করবেন এরকম নানান বিষয়। যার উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার সফল জীবনের ছক সাজাতে পারেন।
সবাইকে পরবর্তী পর্বেরআমন্ত্রণ জানিয়ে এই পর্বের সফল পরিসমাপ্তি টানছি। আশা করি, আজকের আলোচনায় আপনারা অল্প হলেও নতুন কিছু পেয়েছেন। এভাবে, আট পর্ব শেষ করুন, তাহলেই আপনি নিজেকে অনলাইন মার্কেটে একজন ক্রিয়েটিভ রাইটার হিসেবে পরচিতি করাতে পারবেন।
No comments:
Write comments